রুমেল আফ্রাদ রুবেল,বেলাব (নরসিংদী) :
নরসিংদীর বেলাব উপজেলার কাশিম নগর উচ্চ বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে মোবাইল ফোন ব্যবহার করে টিকটক ভিডিও ধারণ ও নাচানাচির ঘটনায় সাতজন শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার রুমেল আফ্রাদ রুবেল করা হয়েছে। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি, শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট এবং শৃঙ্খলাবিরোধী কার্যকলাপের দায়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটে ২৩ জুলাই ২০২৫, বুধবার , বিদ্যালয় চলাকালীন সময়ে। অভিযোগ রয়েছে, ৮ম শ্রেণির ২ জন ও ৯ম শ্রেণির ৫ জন শিক্ষার্থী শিক্ষক অনুপস্থিত থাকার সুযোগে শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করে মোবাইল ফোনে নাচানাচির ভিডিও ধারণ করে, যা পরে টিকটকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ রুবায়েত হোসেন, শিক্ষার্থীদের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শর্তে বলেন, “৮ম শ্রেণীর ২ জন ও ৯ম শ্রেণীর ৫ জন শিক্ষার্থী ক্লাসরুমে ঢুকে মোবাইলে টিকটক নাচানাচি করছিলো। এই জন্য তাদেরকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। পরবর্তীতে ম্যানেজিং কমিটির মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক জানান, শিক্ষার্থীদের হাতে মোবাইল ফোন থাকা নিয়মবহির্ভূত এবং এটি বিদ্যালয়ের শৃঙ্খলার চরম লঙ্ঘন। বিষয়টি তদন্ত করে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের পক্ষে মত দিয়েছেন তারা।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো: ইব্রাহিম খলিলকে না পেয়ে মুঠোফোন যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে অভিভাবক কয়েকজনের সাথে কথা কথা বললে তারা বলেন “বিদ্যালয় শুধু পাঠদানের জায়গা নয়, এটি একটি নৈতিক শিক্ষার কেন্দ্রও। প্রযুক্তির অপব্যবহার ঠেকাতে স্কুলের ভেতরে মোবাইল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা উচিৎ । আমরা চাই না, একজন শিক্ষার্থীর সামান্য অবহেলায় তার ভবিষ্যৎ ক্ষতিগ্রস্ত হোক। তবে শৃঙ্খলার ব্যাপারে আমরা কোনো আপস করবো না।”
ঘটনার পরপরই বিদ্যালয়ে এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয় এবং অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর পাশাপাশি গঠন করা হয়েছে একটি অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি, যারা পুরো ঘটনার ভিডিও বিশ্লেষণসহ প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য গ্রহণ করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত করবে।
এই ঘটনার ব্যাপারে বেলাব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল করিম বলেন আপনাদের মাধ্যমে আমি জানতে পারছি। বিষয়টি ভালোভাবে জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ হবে
এই ঘটনা আবারও প্রমাণ করে, প্রযুক্তির যেমন ভালো দিক রয়েছে, তেমনি অপব্যবহার ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে। শিক্ষার্থীদের নৈতিক শিক্ষা, প্রযুক্তি ব্যবহারে সতর্কতা এবং পারিবারিক নজরদারি ছাড়া এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঠেকানো কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। সময় এসেছে শিক্ষক, অভিভাবক ও সমাজ—তিন পক্ষকেই দায়িত্বশীল হয়ে নতুন প্রজন্মকে সঠিক পথে রাখার জন্য সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহবান জানান।